জমি নির্বাচন, জমি তৈরি, শস্যের ধরণ ও নির্ধারণ, চাষ পদ্ধতি, বীজ সংগ্রহ, বীজতলা তৈরি, চারা উৎপাদন, বীজ বপন, চারা রোপন, মাটির ধরণ ও বাছাই, সেচ প্রদান, সার প্রয়োগ, আগাছা নিধন বা বাছাই, ক্ষতিকর পোকামাকড় নিধনসহ সম্ভাব্য ফসল উৎপাদন ও পশুপাখি পালনের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির সফল ও লাগসই প্রয়োগের প্রয়োজনে প্রশ্নোত্তরে কৃষিবিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
১. বেগুনের ফল ও ডগা-ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে?
•সেক্স-ফেরোমনের ট্র্যাপ ব্যবহার করা দরকার।
২. লাউ কুমড়ার ফ্রুট ফ্লাই বা ফলের মাছি পোকা দমনের উপায় কি?
•মিথাইল ইউজেনল সেক্স-ফেরোমন ফাঁদ ও বিষটোপের সমণ্বিত ব্যবহার করা দরকার।
৩. ধানের মাজরা পোকা দমনের জন্য কি ব্যবহার করতে হবে?
•ফুরাডান/কার্বোফুরাডানের ব্যবহার করা উচিত।
৪. লাউ, কুমড়া ও শশার ফল-পচা রোগ দমনের উপায় কি?
•মেনকোজেব + মেটালিক্স (৭২% ডব্লিউপি) অথবা কার্বেনডাজিমের মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. কিভাবে বীজ-বাহিত রোগ দমন করা যায়?
•থিরাম/কার্বেনডাজিম দ্বারা বীজ শোধন করে নিতে হবে।
৬. মরিচের ডগা ও ফল-পচা রোগ দমনের উপায় কি?
•কার্বেনডাজিম কিংবা যেকোন সিস্টেমিক ছত্রাকনাশকের ব্যবহার।
৭. পাটের বিছা পোকা দমনের উপায় কি?
•যেকোন সিস্টেমিক কীটনাশক যথা ল্যামড়া-সাইহেলোথ্রিন, রিপকর্ড বা সাইফারমেথ্রিনের ব্যবহার করা যেতে পারে।
৮. ঢেঁড়সের পাতা হলদে-মোজাইক রঙের হয়ে গেলে এটা কোন রোগের লক্ষণ?
•এটা ঢেঁড়সের মোজাইক রোগের লক্ষণ, পাতায় হলুদ ও সবুজের ছোপ ছোপ রঙের দাগ দেখা দেয়।
৯. ঢেঁড়সের মোজাইক রোগের বাহক কি এবং কিভাবে তা দমন করা যাবে?
•এক প্রকার সাদা মাছি এ রোগের বাহক এবং এ রোগ দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড (টিটো, হটশক) সাতদিন পর পর ব্যবহার করতে হবে।
১০. পেঁপের আকৃতি আঁকাবাঁকা কেন হয় এবং এর প্রতিকার কি?
•মাটিতে বোরনের অভাবের জন্য পেঁপের চেহারা বক্রাকারের হয়। চারা রোপনের সময় গাছ প্রতি ৫-১০ গ্রাম বোরন সার ব্যবহার করা উচিত অথবা বাড়ন্ত গাছে প্রতি ১ লিটার পানিতে ১ গ্রাম বোরনের মিশ্রণ স্প্রে করা দরকার।
১১. মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগ দমনের উপায় কি?
•ভার্টিমেক (এবামেক্টিন) + কার্বেনডাজিমের ব্যবহার করা যেতে পারে।
১২. গোলআলুর আর্লি এবং লেইট ব্লাইট রোগ দমনের উপায় কি?
•আর্লি ব্লাইট দমনের জন্য মেনকোজেব এবং লেইট ব্লাইট দমনের জন্য মেনকোজেব+ মেটালিক্স (৭২% ডব্লিউপি)-এর মিশ্রণ ব্যবহার করা উচিত।
১৩. সরিষার ক্ষতিকর পোকা কোনটি এবং কিভাবে এটি দমন সম্ভব?
•সরিষার ক্ষতিকর পোকা হল জাবপোকা যা ম্যালাথিয়ন বা সাইফারমেথ্রিন স্প্রে করে দমন করা সম্ভব।
১৪. কোন পোকার দ্বারা পেঁপের মোজাইক রোগ ছড়ায়?
•জাব পোকা।
১৫. গাছের শাখা প্রশাখা উপরের দিক থেকে শুকিয়ে মরে যাওয়ার কারণ কি?
•এটি একটি রোগের লক্ষণ যার নাম ডাইব্যাক।
১৬. উদ্ভিদের রোগ দমনের মূল নীতি কি?
•রোগ-জীবাণু বর্জন করা।
১৭. প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন আইনের দরকার কেন?
•বিদেশ থেকে আমদানীকৃত উদ্ভিদের সাথে যাতে কোন প্রকার রোগ জীবাণু আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার জন্য এটার দরকার ।
১৮. ধানের ব্লাস্ট রোগের বাহক কি?
•ধানের বীজ।
১৯. ধানের ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ কোথায় দেখা যায়?
•ধানের পাতায়, গিটে ও শীষে।
২০. খোলপচা রোগে ধানের কি ক্ষতি হয়?
•ধান চিটা ও অপুষ্ট হয়।
২১. আমের হপার, স্কেল ও মিলিবাগ পোকা দমনের কাজে কি করতে হবে?
•সাইফারমেথ্রিন, সিমবুস, রিপকর্ড কিংবা ক্যারাটে কীটনাশক @১ মি.লি./লি., এক্রোভেট ও থিওভেট @২ গ্রাম/লি., ডেসিস ২.৫ ইসি @০.৫ মি.লি./লি. প্রয়োগ করা দরকার।
২২. ধানক্ষেতে বাদামী গাছ ফড়িং আক্রমণের লক্ষণ কি?
•ধানক্ষেতে আক্রান্ত স্থান পুড়ে ঝলসে-যাওয়া রূপ ধারণ করে।
২৩. লেবুর পাতায় সুড়ঙ্গ করে পাতায় পোকার আক্রমণের প্রতিকার কি?
•এটি লিফ মাইনর পোকা; এডমায়ার @০.৫ মি.লি./লি.; রগর/রক্সিয়ন/পারফেকথিয়ন/কিনালাক্স @২ মি.লি./লি., ১০ দিন পর পর ২-৩ বার প্রয়োগ করা দরকার ।
২৪. লেবুর কচি পাতা ও ডগা পোকায় নষ্ট করে ফেলে- এর প্রতিকার কি?
•সুমিথিউন ৫০ ইসি/লিবাসিট ৫ ইসি, @২ মি.লি./লি. প্রয়োগ করা দরকার।
২৫. লিচুর পাতা কুঁচকে যায়, পাতার নিচে ভেলভেট কাপড়ের মত আস্তরণ দেখা যায় কেন?
২৬. লেবুর গায়ে দাঁদের মত দেখা যায়, লেবু কালো হয়ে যায়- এর প্রতিাকার কি?
•এটি লেবুর ক্যাংকার, একতারা ৫ এসজি/ সুমিথিয়ন @১ মি.লি./লি., ব্যাভিস্টিন @২ গ্রাম /লি., সালফার/থিওভিট @০.২% প্রয়োগ করা দরকার এবং আগাছা পরিস্কার করতে হবে।
২৭. আম ও লিচুর পাতায় ফোস্কা পড়ার প্রতিকার কি?
•রগর/রক্সিয়ন-@২ মি.লি./লি. প্রয়োগ করা দরকার।
২৮. বিভিন্ন প্রকার ফল ও তরকারীর পাতায় পাউডারের ন্যায় সাদা জিনিস দেখা যায়-এটি কোন রোগ এবং এর প্রতিকার কি?
•এটি পাউডারী মিলডিউ, কুমুলাক্স/সালফোলাক্স/থিওভিট অথবা ক্যালিক্সিন/বেনলেটের @১গ্রাম/লি., টিল্ট @০.৫ মি.লি./লি. প্রয়োগ করা দরকার।
২৯. ডালিম কালো হয়ে যায় কেন এবং এর প্রতিকার কি?
•এটি ছত্রাকজনিত রোগ, ইন্ডোফিল @২.৫ গ্রাম/লি., নোইন @২ মি.লি./লি., ব্যাভিস্টিন @১ গ্রাম/লি. স্প্রে করতে হবে এবং থলে দ্বারা ফল ঢেকে দিতে হবে।
৩০. নারিকেলের পাতা হলুদাভ ও দাগযুক্ত হয়েছে- এর প্রতিকার কি?
•নোইন/ব্যাভিস্টিন/কারবেন্ডাজিম @২ মি.লি./লি. ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার প্রয়োগ করা দরকার।
৩১. আম ও নারিকেল চারা উঁইপোকার আক্রমণ থেকে বাঁচানোর উপায় কি?
•ডারসবান ২০ ইসি/পাইরিফস @৩ মি.লি./লি. গাছের গোড়ার মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে।
৩২. ফলদ গাছের ডাইব্যাক প্রতিকারের উপায় কি?
•মরা ডাল কেটে গাছ পরিস্কার করে দিতে হবে।
৩৩. আম, পেয়ারা ও অনান্য ফলদ গাছের ভেজিটেটিভ মেলফরমেশন হলে এর প্রতিকার কি?
•ন্যাপথালিন এসিটিক এসিড (এনএএ) হরমোন @২০০ পিপিএম স্প্রে করতে হবে।
৩৪. আমের গায়ে গভীর কাল দাগের সৃষ্টি হয়-এর প্রতিকার কি?
•এটি একটি ছত্রাকঘটিত রোগ (এনথ্রাকনোজ) প্রতিকার:- টিল্ট ২৫০ ইসি, @০.৫ মি.লি./লি., ইন্ডোফিল এম-৪৫ @২ গ্রাম/লি. স্প্রে করতে হবে।
৩৫. পেঁপের গায়ে কাল গর্তের সৃষ্টি হয়- এর প্রতিকার কি?
•নোইন ৫০- ডব্লিউপি, @২ গ্রাম/লি. ব্যাভিস্টিন অথবা কেডাজিম @২ মি.লি./লি. স্প্রে করতে হবে।
1 Comments
বাড়িতে কম্পোস্ট সার তৈরিতে কমলা বা মাল্টার খোসা ব্যবহার করা যাবে কিনা? এতে মাটির এসিডের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা আছে কী না??
ReplyDelete